রাসুলুল্লাহর স. যুগে ক্যালিগ্রাফি শৈলী
-মোহাম্মদ আবদুর রহীম
ক্যালিগ্রাফি সম্পর্কে সবচেয়ে যে প্রশ্নটির সম্মুখিন আমরা হই, সেটা হলো রাসুলুল্লাহ স. এর সময় কোন শৈলিতে কুরআন লেখা হয়েছে? তার কি কোন নমুনা আছে? এর জবাব আমাদের ক্যালিগ্রাফি অঙ্গনে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য এ আলোচনা।
রাসুলুল্লাহ স. পবিত্র কুরআন লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব কয়েকজন সাহাবীকে দিয়েছিলেন। চার খলিফাসহ কুরাইশ ও আনসার সাহাবীদের প্রায় ৪৩ জন এই মহান দায়িত্ব পালন করেন। এদের মধ্যে যায়েদ বিন সাবিত রা. ছিলেন সচিব। রাসুল স.-এর নির্দেশে তিনি হিব্রু ভাষা শিখেছিলেন মাত্র ১৫ দিনে। ইহুদিদের সন্তানদের কুরআন শেখানোর দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়।
আরবি লিপি ইসলাম পূর্ব সময়ে প্রধানত দুই রীতিতে লেখা হত। এক. জাঝম দুই. মুসনাদ।
খাত্তুল জাঝম হচ্ছে উত্তর আরবের থেকে আসা লিপি। আর মুসনাদ হচ্ছে দক্ষিণ আরব অর্থাত ইয়েমেন অঞ্চল থেকে আসা লিপি। আরবরা শীত ও গ্রীষ্মে ইয়েমেন ও সিরিয়া বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যেত। ফলে হিসাব কিতাবের জন্য তাদের এই দুই লিপিতে লিখতে হত। তবে ইরাকের ফোরাত তীরবর্তী হিরা ও আম্বর নগরের লিপিই উত্তর আরবীয় লিপি হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।
ঐতিহাসিক বালাজুরীর মতে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, সর্বপ্রথম তাঈ গোত্রের শাখা বাওলানের তিনজন লোক আরবি বর্ণসমূহ উদ্ভাবন করেন। তারা হলেন- মুরামির ইবনে মুররাহ, আসলাম বিন সুদরাহ এবং আমির বিন জুদরাহ।
তারা আম্বর নগরীতে এসে সিরিয়ার বর্ণমালার মডেল অনুসরন করে আরবী হরফ উদ্ভাবন করেন। মুরামির হরফগুলোর আকৃতি তৈরি করেন, আসলাম হরফগুলোর একক ও যৌগিক রূপ বানান এবং আমির নুকতার প্রয়োগ সমপন্ন করেন। এভাবে আরবি লিপি নাবাতি হিরি- আম্বরি লিপি থেকে স্বাতন্ত্র্য লিপি হিসেবে প্রচলিত হয়। এলিপিটি কিছুটা সংস্কার হয়ে হেজাজে এসে হেজাজী লিপি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
হেজাজী শৈলি হচ্ছে কুরআনের প্রথম লিপি। এই লিপি বৈশিষ্ট্যগত দিক দিয়ে দু'ধরণের। এক. মায়েল (হেলানো) দুই. মাশক(আটোসাটো)। এরপরই কুফার ক্যালিগ্রাফারদের প্রচেষ্টায় কুফি লিপি কুরআনের লিপি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। হযরত ওসমান, আলী এবং হাসান, হুসাইন রা. কুফি শৈলির ওস্তাদ ছিলেন। বাকি সাহাবিগন হেজাজী শৈলির ওস্তাদ ছিলেন।
ছবিতে- ১. হেজাজী শৈলির কুরআন (হিজরী ১ম শতক) ২. হেজাজী মায়েল শৈলি(হিজরী ১ম শতক), ৩. কুফি ও হেজাজী লেখার কলম ও লেখার কৌণিক পার্থক্য। ৪. কুফি শৈলির কুরআনের পাতার অংশ(হিজরী ২য় শতক)।
-মোহাম্মদ আবদুর রহীম
ক্যালিগ্রাফি সম্পর্কে সবচেয়ে যে প্রশ্নটির সম্মুখিন আমরা হই, সেটা হলো রাসুলুল্লাহ স. এর সময় কোন শৈলিতে কুরআন লেখা হয়েছে? তার কি কোন নমুনা আছে? এর জবাব আমাদের ক্যালিগ্রাফি অঙ্গনে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য এ আলোচনা।
রাসুলুল্লাহ স. পবিত্র কুরআন লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব কয়েকজন সাহাবীকে দিয়েছিলেন। চার খলিফাসহ কুরাইশ ও আনসার সাহাবীদের প্রায় ৪৩ জন এই মহান দায়িত্ব পালন করেন। এদের মধ্যে যায়েদ বিন সাবিত রা. ছিলেন সচিব। রাসুল স.-এর নির্দেশে তিনি হিব্রু ভাষা শিখেছিলেন মাত্র ১৫ দিনে। ইহুদিদের সন্তানদের কুরআন শেখানোর দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়।
আরবি লিপি ইসলাম পূর্ব সময়ে প্রধানত দুই রীতিতে লেখা হত। এক. জাঝম দুই. মুসনাদ।
খাত্তুল জাঝম হচ্ছে উত্তর আরবের থেকে আসা লিপি। আর মুসনাদ হচ্ছে দক্ষিণ আরব অর্থাত ইয়েমেন অঞ্চল থেকে আসা লিপি। আরবরা শীত ও গ্রীষ্মে ইয়েমেন ও সিরিয়া বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যেত। ফলে হিসাব কিতাবের জন্য তাদের এই দুই লিপিতে লিখতে হত। তবে ইরাকের ফোরাত তীরবর্তী হিরা ও আম্বর নগরের লিপিই উত্তর আরবীয় লিপি হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।
ঐতিহাসিক বালাজুরীর মতে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, সর্বপ্রথম তাঈ গোত্রের শাখা বাওলানের তিনজন লোক আরবি বর্ণসমূহ উদ্ভাবন করেন। তারা হলেন- মুরামির ইবনে মুররাহ, আসলাম বিন সুদরাহ এবং আমির বিন জুদরাহ।
তারা আম্বর নগরীতে এসে সিরিয়ার বর্ণমালার মডেল অনুসরন করে আরবী হরফ উদ্ভাবন করেন। মুরামির হরফগুলোর আকৃতি তৈরি করেন, আসলাম হরফগুলোর একক ও যৌগিক রূপ বানান এবং আমির নুকতার প্রয়োগ সমপন্ন করেন। এভাবে আরবি লিপি নাবাতি হিরি- আম্বরি লিপি থেকে স্বাতন্ত্র্য লিপি হিসেবে প্রচলিত হয়। এলিপিটি কিছুটা সংস্কার হয়ে হেজাজে এসে হেজাজী লিপি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
হেজাজী শৈলি হচ্ছে কুরআনের প্রথম লিপি। এই লিপি বৈশিষ্ট্যগত দিক দিয়ে দু'ধরণের। এক. মায়েল (হেলানো) দুই. মাশক(আটোসাটো)। এরপরই কুফার ক্যালিগ্রাফারদের প্রচেষ্টায় কুফি লিপি কুরআনের লিপি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। হযরত ওসমান, আলী এবং হাসান, হুসাইন রা. কুফি শৈলির ওস্তাদ ছিলেন। বাকি সাহাবিগন হেজাজী শৈলির ওস্তাদ ছিলেন।
ছবিতে- ১. হেজাজী শৈলির কুরআন (হিজরী ১ম শতক) ২. হেজাজী মায়েল শৈলি(হিজরী ১ম শতক), ৩. কুফি ও হেজাজী লেখার কলম ও লেখার কৌণিক পার্থক্য। ৪. কুফি শৈলির কুরআনের পাতার অংশ(হিজরী ২য় শতক)।
Comments
Post a Comment