Skip to main content

Terminology of Calligraphy

 

 
মুসতলাহাতুল খত্
ক্যালিগ্রাফির পরিভাষা
 
আল খত্ত অল রসম ফিল ফান্নিল শারকি
প্রাচ্যশিল্পকলায় ক্যালিগ্রাফি ও অঙ্কন
 
২০১৮ সালে আমার এমফিল চুড়ান্ত ভাইবা পরীক্ষার দিনে একটি প্রশ্ন ছিল- প্রাচ্যশিল্পকলায় ক্যালিগ্রাফি ও অঙ্কন বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? বিষয়টি নিয়ে বহু বছর ধরে আমিও চিন্তা ভাবনা করেছি। মূলত বিভিন্ন প্রদর্শনী, ক্যাটালগ, বই-পত্র, জাদুঘরে রক্ষিত মুঘল, রাজপুত, দক্ষিণী ধারার ছবি দেখে, এর আঁকার রীতি নিয়ে ভেবেছি এবং পড়াশুনা অব্যাহত রেখেছি। গতকাল জুমাবার টাঙ্গাইলে ১ম ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গিয়ে অংশগ্রহণকারীদের একজন এমন ধরণের প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি আমার একটি ক্যালিগ্রাফির ভেতর ফুল লতা পাতার নকশা দেখে জানতে চান, সেটা কী তরিকায় করা হয়েছে? আমি বললাম, এটা প্রাচ্যকলা (আল ফান্ন আল শারকি) তরিকার করা। অর্থাৎ ক্যালিগ্রাফি ও অঙ্কন অলঙ্করণ সবই ক্যালিগ্রাফি কলম ও কালি দিয়ে করা।
প্রাচ্যশিল্পে ক্যালিগ্রাফি ও আঁকার কাজে উপায় উপকরণের ভিন্নতা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রাচ্যশিল্পের সবধরণের উপায় উপকরণ ও রীতির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। প্রাচিন ভারতীয় রীতিতে ছবি আঁকা ও লেখার কাজে কলমের ব্যবহার ব্যাপক ছিল, এমনকি বাংলায় পাল আমলের চিত্রকলায় ক্যালিগ্রাফি কলমের ব্যবহারের দৃষ্টান্ত অনেক। এছাড়া রীতি বুঝাতে কলম বলা হত। যেমন দক্ষীণী কলমে ছবি আঁকা। এখানে আকঁ কথা দ্বারা কলমের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে চিনা জাপানি শিল্পকলায় বিশেষ ধরণের তুলি(সুডো তুলি) দিয়ে ক্যালিগ্রাফি ও চিত্রাঙ্কন দুটোই করা হয়। চিনা প্রভাবিত মধ্য এশিয়া ও মুঘল চিত্রকলায় ছবি আঁকা হয়েছে তুলি দিয়ে আর ক্যালিগ্রাফি করা হয়েছে কলম দিয়ে এবং কালি ও রঙের ব্যবহার প্রযোজ্যস্থানে দক্ষতার সাথে করা হয়েছে।
আশাকরি বিষয়টি খোলাশা হয়েছে। সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।
 
ছবি- প্রাচ্যরীতিতে লেখা ও আঁকা একটি কাজ।
 

 

Comments

Popular posts from this blog

বাংলা ক্যালিগ্রাফি : অনুভব ও শৈলী

-মোহাম্মদ আবদুর রহীম মানুষ জীবনযাপনে বাহ্যিক প্রয়োজন পূরণের পরও মানসিক আনন্দলাভ বা আত্মপিয়াস মেটাতে কিছু দেখতে, শুনতে কিংবা ছুয়ে দেখতে চায়। তার সংস্কৃতির মধ্যে নিজকে প্রকাশ করতে কিংবা সৃজনশীল কিছু করে আনন্দ পেতে চায় এবং অন্যকে আনন্দ দিতে তার ইচ্ছে জাগে। সুতরাং বলা যায়, কোন জাতির সংস্কৃতির মধ্যে যে সৃজনশীল ও প্রতিভার পরিচয় আমরা দেখতে পাই, সেটাই শিল্পকলা।শিল্পকলার অতি প্রাচীন একটি শাখা হচ্ছে ক্যালিগ্রাফি।ক্যালিগ্রাফি শব্দটা ইংরেজি । এটা গ্রীক শব্দ ক্যালিগ্রাফিয়া থেকে এসেছে । গ্রীক শব্দ ক্যালোস এবং গ্রাফেইনের মিলিত রূপ ক্যালিগ্রাফিয়া । ক্যালোস = সুন্দর , আর গ্রাফেইন = লেখা । সুতরাং   ক্যালিগ্রাফির পরিচয় এভাবে দেয়া যেতে পারে -   হরফ বা টেকসট ব্যবহার করে চমৎকার লেখন শিল্পকে ক্যালিগ্রাফি বলে । বর্তমানে , এই আর্ট ফর্মকে বিভিন্ন দেশ , ভাষা এবং ধর্মের লোকেরা আনন্দচিত্তে গ্রহণ এবং চর্চা করে চলেছেন । পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষার হরফে ক্যালিগ্রাফি করা হয়েছে। আরবি, ইংরেজি, চীনা, জাপানী প্রভৃতি ভাষার হরফের ক্যালিগ্রাফি মানুষকে মোহিত ও আনন্দিত

বাংলা ভূখন্ডে ক্যালিগ্রাফির পদযাত্রায় শিলালিপির ভূমিকা

Muhaqqaq style -মোহাম্মদ আবদুর রহীম ক্যালিগ্রাফিকে শুধুমাত্র 'হাতের লেখা' বলে পরিচয় দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় এর অর্থ। 'সুন্দর হাতের লেখা' বললে আক্ষরিক অর্থ বলা হয়। আরব সিভিলাইজেশন প্রবন্ধে বলা হয়েছে- আরবি লিপিকলা প্রবহমান নকশা এবং জটিল জ্যামিতিক ডিজাইনের সমন্বয়। এই নান্দনিক লিপিকলা সম্পর্কে আলেকজান্দ্রিয়ার দার্শনিক ও গণিতের জনক ইউক্লিদ বলেন, "একটি 'আধ্যাত্মিক কৌশল' হিসেবে ক্যালিগ্রাফিকে গত ১৩শত বছর ধরে আরবদের কলম শুধু বিশুদ্ধ এবং সমৃদ্ধ করেছে।" আসলে ক্যালিগ্রাফি হচ্ছে লিপিকলা বা লিপি দিয়ে যে শিল্পকর্ম করা হয়। বাংলা ভূখন্ডে প্রাচীন কাল থেকে যারা শাসন করেছেন, তারা সুবিধামত একটি ভাষাকে রাজভাষা করেছেন এবং নথিপত্রে তা ব্যবহার করেছেন, জনসাধারণের সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে এভাষায় জনহীতকর কাজের পরিচিতি ফলক বানিয়েছেন। প্রাচীনকাল থেকে এ অঞ্চলে পাথরে, তাম্র ফলকে এর নিদর্শন দেখা যায়। কাগজ বা টেকসইবিহীন মাধ্যমে এই নিদর্শন পাওয়া দুষ্কর। একটা মজার বিষয় হচ্ছে, ক্যালিগ্রাফির সত্যিকার পদযাত্রা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাচীন নিদর্শন খুজতে গিয়ে ১২০৬ সালে (১

Sulus Lipisaili (khatt al-sulus) PDF book

   Sulus Lipisaili book PDF