Skip to main content

কাঁচা রঙ - পাকা রঙ সমাচার Raw Color - Ripe Color in Painting

 



 
 
অনেক বছর আগের কথা। শৈশবে খুলনা শিশু একাডেমিতে ছবি আঁকা শিখতে যেতাম। সেখানে খুলনা আর্ট কলেজের শিক্ষকগণ ক্লাস নিতেন। কিছুদিন রফিক স্যার(ড. রফিকুল আলম) কে পেয়েছিলাম। তখন একটা কথা খুব চিন্তায় ফেলত। তিন দশক ধরে ক্যালিগ্রাফির ছাত্র পড়াতে গিয়ে যখন রঙের বিষয় আসে, সেখানেও কথাটা চলে আসে। ছাত্ররা রঙ করে আর ওস্তাদ বলেন, রঙটা কাঁচা হয়েছে। ওটা পাকাতে হবে।
প্রশ্ন হলো রঙ তো রঙই। সেটার আবার কাঁচা-পাকা কি!! আমরা পানি রঙ বা এক্রেলিক রঙের সাধারণত ১২টা শেডের সেট কিনে থাকি। এই শেডগুলোর কয়েকটা সরাসরি ব্যবহার করি আর কিছু শেডের সাথে অন্য রঙ মিলিয়ে ব্যবহার করি। চারুকলার ছাত্ররা এটা হাতে-কলমে রপ্ত করেন এবং এর ভেতরের কৌশলগুলো স্যারদের কাছ থেকে পেয়ে থাকেন। একই রঙ, বিভাগ ভিন্নতার কারণে 'ভাব প্রকাশ' আলাদা হয়। ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগ এবং ওরিয়েন্টাল আর্ট বিভাগের কাজের মধ্যে এ পার্থক্য বেশ দেখা যায়।
এছাড়া রঙ প্রয়োগের বিষয়ে জমিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কাগজ বা ক্যানভাসের জমিন সম্পর্কে ধারণা না থাকলে রঙ বেশি খরচা হয় তবু মনমত ফল পাওয়া যায় না।
রঙ কাঁচা-পাকার বিষয়টা শুধু বলে দিলে হয় না, গভীর মনযোগ সহকারে রপ্ত করতে হয়। যে কারণে, ক্যালিগ্রাফির ছাত্র পড়াচ্ছেন অনেকে অনেক দিন ধরে কিন্তু রঙের কাঁচাভাব পুরোমাত্রায় বিদ্যমান উনাদের কাজে। এছাড়া পরিমিতিবোধ হারিয়ে টেকচারের নামে ওভারকুক বা গুরুপাক হয়ে যায় বহু কাজ।
যাহোক সাবজেক্ট ও অবজেক্টকে রঙ প্রয়োগে সহজে আলাদা করার উদাহরণ হিসেবে আমার একটা কাজের ছবি এবং রঙ প্রয়োগের অসাধারণ ওস্তাদি কাজের উদাহরণ হিসেবে প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক নাসরিন বেগম ম্যামের কাজের একটা ছবি দিলাম।
 
Nayatola, Dhaka
27-7-2022
 

 

Comments

Popular posts from this blog

বাংলা ক্যালিগ্রাফি : অনুভব ও শৈলী

-মোহাম্মদ আবদুর রহীম মানুষ জীবনযাপনে বাহ্যিক প্রয়োজন পূরণের পরও মানসিক আনন্দলাভ বা আত্মপিয়াস মেটাতে কিছু দেখতে, শুনতে কিংবা ছুয়ে দেখতে চায়। তার সংস্কৃতির মধ্যে নিজকে প্রকাশ করতে কিংবা সৃজনশীল কিছু করে আনন্দ পেতে চায় এবং অন্যকে আনন্দ দিতে তার ইচ্ছে জাগে। সুতরাং বলা যায়, কোন জাতির সংস্কৃতির মধ্যে যে সৃজনশীল ও প্রতিভার পরিচয় আমরা দেখতে পাই, সেটাই শিল্পকলা।শিল্পকলার অতি প্রাচীন একটি শাখা হচ্ছে ক্যালিগ্রাফি।ক্যালিগ্রাফি শব্দটা ইংরেজি । এটা গ্রীক শব্দ ক্যালিগ্রাফিয়া থেকে এসেছে । গ্রীক শব্দ ক্যালোস এবং গ্রাফেইনের মিলিত রূপ ক্যালিগ্রাফিয়া । ক্যালোস = সুন্দর , আর গ্রাফেইন = লেখা । সুতরাং   ক্যালিগ্রাফির পরিচয় এভাবে দেয়া যেতে পারে -   হরফ বা টেকসট ব্যবহার করে চমৎকার লেখন শিল্পকে ক্যালিগ্রাফি বলে । বর্তমানে , এই আর্ট ফর্মকে বিভিন্ন দেশ , ভাষা এবং ধর্মের লোকেরা আনন্দচিত্তে গ্রহণ এবং চর্চা করে চলেছেন । পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষার হরফে ক্যালিগ্রাফি করা হয়েছে। আরবি, ইংরেজি, চীনা, জাপানী প্রভৃতি ভাষার হরফের ক্যালিগ্রাফি মানুষকে মোহিত ও আনন্দিত

বাংলা ভূখন্ডে ক্যালিগ্রাফির পদযাত্রায় শিলালিপির ভূমিকা

Muhaqqaq style -মোহাম্মদ আবদুর রহীম ক্যালিগ্রাফিকে শুধুমাত্র 'হাতের লেখা' বলে পরিচয় দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় এর অর্থ। 'সুন্দর হাতের লেখা' বললে আক্ষরিক অর্থ বলা হয়। আরব সিভিলাইজেশন প্রবন্ধে বলা হয়েছে- আরবি লিপিকলা প্রবহমান নকশা এবং জটিল জ্যামিতিক ডিজাইনের সমন্বয়। এই নান্দনিক লিপিকলা সম্পর্কে আলেকজান্দ্রিয়ার দার্শনিক ও গণিতের জনক ইউক্লিদ বলেন, "একটি 'আধ্যাত্মিক কৌশল' হিসেবে ক্যালিগ্রাফিকে গত ১৩শত বছর ধরে আরবদের কলম শুধু বিশুদ্ধ এবং সমৃদ্ধ করেছে।" আসলে ক্যালিগ্রাফি হচ্ছে লিপিকলা বা লিপি দিয়ে যে শিল্পকর্ম করা হয়। বাংলা ভূখন্ডে প্রাচীন কাল থেকে যারা শাসন করেছেন, তারা সুবিধামত একটি ভাষাকে রাজভাষা করেছেন এবং নথিপত্রে তা ব্যবহার করেছেন, জনসাধারণের সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে এভাষায় জনহীতকর কাজের পরিচিতি ফলক বানিয়েছেন। প্রাচীনকাল থেকে এ অঞ্চলে পাথরে, তাম্র ফলকে এর নিদর্শন দেখা যায়। কাগজ বা টেকসইবিহীন মাধ্যমে এই নিদর্শন পাওয়া দুষ্কর। একটা মজার বিষয় হচ্ছে, ক্যালিগ্রাফির সত্যিকার পদযাত্রা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাচীন নিদর্শন খুজতে গিয়ে ১২০৬ সালে (১

Sulus Lipisaili (khatt al-sulus) PDF book

   Sulus Lipisaili book PDF